শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:০২ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নে দোষী সাব্যস্ত করে কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী সিনিয়র নেতা ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ভারতের একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, অর্থায়ন এবং অপরাধী ষড়যন্ত্রে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
আদালতে ইয়াসিন মালিক জানান, তিনি ১৯৯০ এর দশকে অস্ত্র সমর্পণ করেছেন। গত সপ্তাহে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ভারত শাসনের বিরুদ্ধে কাশ্মিরে ১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজধানী দিল্লির একটি আদালত ৫৬ বছরের ইয়াসিন মালিককে দুইবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পাঁচবার দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। সব সাজা একই সঙ্গে কার্যকর হবে।
ইয়াসিন মালিকের স্ত্রী মুশাল হোসেন এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তার স্বামী কখনও আত্মসমর্পণ করবেন না। তিনি লেখেন, ‘ভারতীয় ক্যাঙ্গারু আদালত কয়েক মিনিটের মধ্যে দণ্ড দিয়ে দিয়েছে।’
রায় ঘোষণার পর ভারত শাসিত কাশ্মিরের মূল শহর শ্রীনগরের কিছু এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ইয়াসিন মালিকের বাসভবনের বাইরে সমবেত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। নিরাপত্তা সতর্কতা হিসেবে ওই এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধ সামাল দেওয়া ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইয়াসিন মালিকের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে। স্বাধীনতাপন্থী জম্মু অ্যান্ড কাশ্মিরি লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) নেতা ইয়াসিন মালিকের সরকার নিয়োজিত আইনজীবী যাবজ্জীবন সাজার আবেদন জানান।
২০১৯ সালে জেকেএলএফ নিষিদ্ধ ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই ইয়াসিন মালিককে গ্রেফতার করা হয়। কঠোর বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) এর আওতায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহ এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগের বিরোধিতা করেননি ইয়াসিন মালিক। তবে গক সপ্তাহে দোষী সাব্যস্ত করার পর জেকেএলএফ এর এক বিবৃতিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আদালতে ইয়াসিন মালিক বিচারকের উদ্দেশে বলেছেন, ‘স্বাধীনতা চাওয়া যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমি এই অপরাধ এবং তার পরিণতি স্বীকার করে নিতে প্রস্তুত।’
আদালতে ইয়াসিন মালিক আরও জানান, ১৯৯৪ সালে অস্ত্র সমর্পণের পর থেকে তিনি মহাত্মা গান্ধীর নীতি অনুসরণ করে চলেছেন। তারপর থেকে তিনি কাশ্মিরে অহিংস রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি করেন তিনি। ওই সময়ের পরে তিনি কোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন এমন কিছুর প্রমাণ দিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। যেসব অপরাধে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় সেগুলো ২০১০ ও ২০১৬ সালে সংগঠিত হয় বলে জানায় প্রসিকিউটররা।